top of page

সৎ মানুষের সাহচর্যে বেহেশত পাওয়া যায়

  • আবদুল হামিদ
  • Oct 1, 2017
  • 2 min read

নেক কাজের চেয়ে নেক সোহবত উত্তম, আর বদ কাজের চেয়ে বদ সোহবত নিকৃষ্ট

সোহবত বলা হয়- সঙ্গ লাভ করা, সাথী হওয়া কিংবা সংসর্গকে। মানব জীবনে সঙ্গ লাভ কিংবা সংসর্গের প্রভাব কার্যকরভাবে বিদ্যমান। এ জন্য বলা হয়, নেক কাজের চেয়ে নেক সোহবত উত্তম। আর বদ কাজের চেয়ে বদ সোহবত নিকৃষ্ট।

তাই তো প্রবাদে আছে, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ সৎ সঙ্গের মাধ্যমে স্বর্গ তথা জান্নাত লাভ হয়। আর অসৎ সঙ্গের প্রভাবে অনেকের জীবন মারত্মকভাবে প্রভাবিত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। একজন নষ্ট মানুষের দরুণ শুধু একটি পরিবার নয়, সমাজ ও রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জ্ঞানীরা বলেছেন, সৎ সঙ্গের প্রভাবে মানুষ মহামানব হয় আর অসৎ সঙ্গের স্পর্শে সোনালী সম্ভাবনাময় জীবন অংকুরে বিনাশ হয়ে যায়। ফুল ফোটার পূর্বে ঝরে যায়। বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. নাজমুল করিম তার ‘সমাজ সমীক্ষণ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ‘অমলা ও কমলা দুই বোনকে কিছু দিন বাঘের বাচ্চার সঙ্গে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন পর দেখা যায় অমলা ও কমলা এ দু’জন শিশুর আচরণ বাঘের বাচ্চার ন্যায় হয়ে গিয়েছিল।’

একটি শিশু যে পরিবেশ ও সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে বেড়ে উঠে, তার আচার-আচরণের ওপর সে পরিবেশ ও সমাজ ব্যবস্থার একটি প্রভাব থাকে। শিশু তার আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্থ হয়ে বেড়ে উঠাকে সামাজিকীকরণ বলে।

এটাকে কবি অত্যন্ত সুন্দরভাবে বলেছেন, ‘কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলেছে তা বহুদূর মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষের মাঝে সুরাসুর।’

সৎ মানুষের সোহবতে থাকলে স্বর্গের সন্ধান পাওয়া যায়। ভালো মানুষের নিকট স্বর্গের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। সোহবত সম্পর্কে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘সত্যবাদীদের সাথী হও।’ -সূরা তওবা : ১১৯

ইসলাম সত্য ও সুন্দর। কোরআন মানুষকে সৎ ও সুন্দর মনের মানুষের সঙ্গে উঠা বসা চলাফেরা করার জন্য তাগিদ নেক কাজের চেয়ে নেক সোহবত উত্তম, আর বদ কাজের চেয়ে বদ সোহবত নিকৃষ্ট দিয়েছে। নবী-রাসূল, অলি-আউলিয়া, আলেম-উলামাদের পথ হলো সত্য ও সুন্দর। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং সেজদাকরীর অন্তর্ভুক্ত হও।’ -সূরা হিজর: ৯৮ নবী-রাসূলরা ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত। তাদের সঙ্গ ছিল দুনিয়ার সবকিছু থেকে মূল্যআন। এখন যেহেতু নবী আগমনের ধারা বন্ধ, সে হিসেবে নবীদের উত্তরসূরি অলি-আউলিয়াদের সঙ্গ, তাদের সাহচর্য মানুষের জন্য রহমতস্বরূপ। পরশ পাথরের স্পর্শে লোহা যেমন স্বর্ণে পরিণত হয়। তেমনি সৎ মানুষের সোহবতে মানুষ জান্নাতি হয়ে যায়। বিপদগামী মানুষ হেদায়েত পায়। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা কল্যাণমূলক ও খোদাভীরুতার কাজে পরস্পর সহযোগী হও, মন্দ ও সীমা লঙ্ঘনের কাজে পরস্পরের সহযোগী হয়ো না।’ -সূরা মায়েদা: ২ হজরত মাওলনা জালাল উদ্দিন রূমি (রহ.) বলেছেন, ‘একটু সময় কামেল অলি-আউলিয়াদের মজলিসে বসলে হাজার বছরের ইবাদতের চেয়ে বেশি সুফল পাওয়া যায়। সোহবতের মাধ্যমে মানুষের আত্মার বিপ্লব ঘটে। মানুষের হৃদয়ের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পায়। মানুষ আল্লাহওয়ালা হয়ে যায়। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে ভয় কর, তার (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের জন্য তোমরা মাধ্যম (উছিলা) অনুসন্ধান (তালাশ) কর এবং তার পথে সংগ্রাম কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ -সূরা মায়িদা: ৩৫ বর্ণিত আয়াতে বুঝা যাচ্ছে, তারাই সফলকাম হবে। যারা ভালো লোকের সোহবতে থাকবে। বস্তুত আত্মার উন্নয়ন আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সোহবত একটি উত্তম মাধ্যম। মানুষের ইহকাল ও পরকাল সুন্দর করতে হলে অবশ্যই ভালো মানুষের সোহবতে যেতে হবে। অন্যকে ভালো মানুষের সোহবতে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

লেখক- কম্পিউটার শিক্ষক, মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়।

 
 
 

Comments


  • Facebook

01814725689

Ukhiya Upazila, Bangladesh

©2017 by Maricha Palong High School. Proudly created with Wix.com

bottom of page